আহাম্মদ কবির,ঃ সুনামগঞ্জ তাহিরপুর উপজেলায় করোনা সংক্রামক বিস্তার রোধে কর্মহীন থাকা দরিদ্র পরিবারের সহায়তায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও রাজনৈতিক ব্যাক্তি বর্গ এগিয়ে এসেছে। তাদের সহায়তার জন্য চাল,ডাল,তেল,আলু, লবণসহ করোনা প্রতিরোধ স্বাস্থ্যসুরক্ষা সামগ্রী নিয়ে যাচ্ছে দরিদ্র অসহায় পরিবারের পাশে। পৌঁছে দিচ্ছে ত্রান-সাহায্য ও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী।
কিন্তু উপজেলায় যাদের মাথাগোঁজার ঠাই নেই নেই কোন আত্নীয়স্বজন বাজার ঘাটে বা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ায় বা দোকানে দোকানে মানুষের কাছে হাত পেতে খাবার যোগাড় করতে হয়।বর্তমানে দোকানপাট সহ সব কিছু বন্ধ এবং গ্রামে গঞ্জে করোনা আতঙ্ক থাকায় এইসব মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগল) মানুষের কাছে সাধারণত খাবার পৌঁছে না।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে
সুনামগঞ্জ তাহিরপুরে সদর বাজারে অবস্থানরত মানসিক ভরসাম্যহীনদের তিনবেলা খাওয়ানোর দায়িত্ব নিয়েছেন তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি।
মরণঘাতী করোনার ভয়াবহতার আতঙ্কে
ও করোনা মোকাবেলায় যতদিন পর্যন্ত দোকানপাট বন্ধ থাকবে,এবং তাদের খাবারের ব্যবস্থা না হবে,ততদিন পর্যন্ত এই মানসিক ভারসাম্যহীনদের এভাবেই খাওয়াবেন ইউএনও বিজেন ব্যানার্জি।
শনিবার (০৪ এপ্রিল) তাহিরপুর সদর বাজারে ঘুরে ঘুরে ওই সব মানসিক প্রতিবন্ধীকে খাবার দেন তিনি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিজেন ব্যানার্জির এ মানবিকতা দৃষ্টান্ত হিসেবে দেখছেন তাহিরপুর উপজেলাবাসী।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিজেন ব্যানার্জি বলেন, তারা মানসিক ভারসাম্যহীন। মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। নেই কোনো আত্মীয়-স্বজন। বাজার-ঘাটে বা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়ান। বাড়িতে বাড়িতে বা দোকানে ঘুরে, মানুষের কাছে হাত পেতে খাবারের যোগাড় করতে হয় তাদের। বাজারের কোনো ভবনের বারান্দায়, সিঁড়িতে, যানবাহন স্ট্যান্ডের যাত্রী ছাউনিতে অথবা দোকানের সামনের ক্রেতাদের বসার জায়গায় রাত কাটান এসব মানুষ।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসের থাবা থেকে রক্ষা পায়নি বাংলাদেশও। করোনা থেকে দেশের মানুষকে রক্ষায় জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে গ্রামে গ্রামে কর্মহীন মানুষের কাছে। কিন্তু এইসব মানসিক ভারসাম্যহীন (পাগল) মানুষের কাছে সাধারণত খাবার পৌঁছে না। এই মুহূর্তে কারো বাড়িতেও তাদেরকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। দোকান বন্ধ থাকায় দোকান থেকেও খাবার চেয়ে খেতে পারছে না। খুবই কষ্টে কাটছে তাদের জীবন। এই কষ্টটা অনুভব করতে পেরে আমি এই উদ্যোগ নিয়েছি।

ইউএনও বিজেন ব্যানার্জি বলেন, সবাইকে একসাথে পাওয়া কঠিন। তাই বাজারের বিভিন্ন জায়গায় (যেসব পয়েন্টে তারা থাকে) ঘুরে তাদেরকে খুঁজে খাবারগুলো বিতরণ করেছি।উনি তাহিরপুর উপজেলার জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলেন উপজেলার প্রত্যেকটি হাটবাজার বা গ্রামে গ্রামে যেখানেই এইসব মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলো দেখা মিলবে তাদের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর জন্য উপজেলা বাসীর প্রতি অনুরোধ জানান,এছাড়াও উনি উনার ইউএন নামে অফিসিয়াল পেইজবুক আইডি হতে উপজেলার যে কোন জানান এলাকায় কোন ভিক্ষুক,ভবঘুরে,দিনমজুর,চা বিক্রেতা,নির্মাণ,পরিবহন,হোটেল শ্রমিক,ভ্যান,রিক্সা,ইজিবাইক চালক,কুলি,মুচি,দর্জি,বাদাম বিক্রেতা,ঝালমুড়ি বিক্রেতা,পাগল অনাহারে থাকলে দ্রুত তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়।