নিবৃত্ত ইচ্ছে
——————–
আজ হঠাৎ করেই ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে,
বারান্দার গ্রিলটাতে হেলান দিয়ে দেখছি,
ইচ্ছে করছে হাত বাড়িয়ে সিক্ত হতে,
মনেতে সংশয় জাগে যদি পাছে কিছু হয়,
যতদূর চোঁখ যায় মানুষের চিহ্নটি নেই,
বৈশ্বিক রীতিনীতিতে প্রকৃতি যেনো উৎসবে মেতেছে,
সবুজ গাছে ছেঁয়ে গেছে পুরো শহরটা,
মানুষের ছুটাছুটি নেই,
যানবাহনের দূষিত বায়ু নেই,
প্রকৃতি যেনো নব যৌবন পেয়েছে,
ইচ্ছে করছে প্রিয়তমা’র হাত ধরে ভিজতে,
এ নিষ্ঠুর পৃথিবীতে এখন বের হওয়ায় যে বারণ,
বারান্দার এক কোনায়-
চড়ুই পাখিরা কিচিরমিচির করছে,
মনে হচ্ছে ওদের কতোই না আনন্দ,
যানবাহনের শব্দ নেই,
মানুষ গুলোও ঘরে বন্দি,
ওদের আর ভয় কিসে!!
বৈশ্বিক মহামারি তাদের স্পর্শ করেনি এখনো,
ঐ যে বটতলা ওখানে ফোসকা’র দোকান ছিল,
কত যুগল যে ওখানে আড্ডায় মেতে থাকতো তার হিসেব নেই,
আজ খুব যেতে ইচ্ছে করছে ওকে নিয়ে ওখানটায়,
ইচ্ছে করছে বেশি করে ঝাল দিয়ে-
দু’জনে ইচ্ছে মত ফোসকা খেতে ,
তারপর দুজনে একসাথে চেঁচানো পানি পানি বলে,
ভেবে ভেবে গ্রিলে মাথা রেখে অজান্তেই হাসি,
তা আর এখন হবার নয় ,
বটতলা’য় জনসমাগম নিষেধ,
ইতিমধ্যে দোকান টাও উঠিয়ে দেয়া হয়েছে,
এই করোনা’র মহামারি’টা কবে যে শেষ হবে!!
আজ এই বৃষ্টিতে –
ওর হাতের খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করছে খুব খুব! ,
বৃষ্টি হলেই ও আমার জন্য –
বাসা থেকে খিচুড়ি রান্না করে নিয়ে আসতো,
এখন শত ইচ্ছে করলেও বাসা থেকে বের হওয়া বারণ,
ভালোবাসার যেনো যাবতজীবন জেল হয়েগেছে,
বৃষ্টি হলে দুজনে ইচ্ছে মত ভিজতাম,
মনে হতো শুদ্ধ হচ্ছি বৃষ্টিস্নাত হয়ে,
এখন ইচ্ছে করলেই তা আর হচ্ছে ক’ ই,
বুকের ভেতরটা ধুমড়েমুচড়ে গেলেও,
ইচ্ছেগুলো বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা,
সারা পৃথিবীতে এখন একই শ্লোগান,
স্টে এ্যট হোম, সেফ লাইফ, সেইফ ন্যাশন ,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও মায়ের কোলে ফিরবো বলে,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও প্রিয়তমার হাসি দেখবো বলে,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও মাতবো রমনা’র বটমূলে,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও মাতবো বসন্তে আর বৈশাখে,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও ভিজবো বর্ষায় প্রিয়তমার হাত ধরে,
আমি ঘরে বন্দি আবার ও মাতবো শরতের হাওয়ায় আর নবান্নের উৎসবে,
বেঁচে থাকলে হয়ত পুষিয়ে নিবো অযুত হারে,
আজ তাই নিবৃত্ত ইচ্ছে তাকিয়ে আগামীর পথে।