দেশের পরিবহন ব্যবস্থায় সংকট কয়েক দশকের। এ খাতে অরাজকতা ও ড্রাইভারদের বেপরোয়া গাড়ি চালনার ফলে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অগণিত মানুষ। বিভিন্ন সংগঠন, শিক্ষার্থী ও জনগণের আন্দোলন ও প্রচেষ্টার ফলস্বরূপ সরকার এ খাতে শৃঙ্খলা আনার ব্যাপারে নজর দিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের সেপ্টেম্বরে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ পাস হয়। আইনটি বাস্তবায়নে সরকার ১৩ মাস সময় নেয়। অবশেষে এ বছর নভেম্বরে কার্যকর করা হয় নতুন আইন। কিন্তু সপ্তাহ না যেতেই সারা দেশে ঘোষিত-অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়। ফলে দেশের পরিবহন খাতের সংকটের জল আরও ঘোলা হয় ওঠে। এ অবস্থায় পরিবহন খাতে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ফিরিয়ে আনা সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নতুন পরিবহন আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে কাভার্ড ভ্যান। সত্যি বলতে কী, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) তালিকায় কাভার্ড ভ্যান নামের কোনো যানবাহন নেই। এটি একটি রূপান্তরিত যান, যা আইনত নিষিদ্ধ। বর্তমানে দেশে প্রায় ২২ হাজার কাভার্ড ভ্যান রয়েছে। এগুলো গত একযুগে ধীরে ধীরে রাস্তায় নামানো হয়েছে। প্রশ্ন হল, সরকার কেন শুরু থেকেই এ ধরনের অননুমোদিত যানবাহনের বিস্তার রোধে পদক্ষেপ নেয়নি? এখন হঠাৎ করে নিষিদ্ধ করতে গেলে সংশ্লিষ্টদের মনে ক্ষোভ দেখা দেবে এটাই স্বাভাবিক। আইনের সঠিক প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। তবে এক্ষেত্রে বিষয়টি ধাপে ধাপে হওয়া উচিত।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হল, গত ১৫ বছরেও আমরা সিটিংয়ের নামে ‘চিটিং’ বাস সার্ভিস বন্ধ করতে পারিনি। অসাধু পরিবহন মালিক আর কিছু স্বার্থান্বেষী দুর্নীতিবাজ আমলার চক্রান্তের ফলে সরকারের পুরো প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হয়েছে।