বিশেষ প্রতিনিধিঃ যেকোনো অজুহাতে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে অসাধু ব্যবসায়ীদের সুযোগসন্ধান সুনামগঞ্জে নতুন কিছু নয়। সংকট তাদের কাছে হীনস্বার্থ হাসিলের লক্ষ্য হয়ে ওঠে। করোনা ভাইরাসে বিশ্ব পরিস্থিতি যখন টালমাটাল, তখনও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এমন পরিস্থিতিতে সুনামগঞ্জে স্বভাবতই লোকজন প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যপণ্য কিনে রাখার প্রতি ঝুঁকেছেন। আজ সন্ধ্যায় কয়েকজন বলেছেন, সুনামগঞ্জে হঠাৎ করে মাস্ক, সব ধরনের চালের দাম সহ সব জিনিষের দাম বেড়ে গেছে। অথচ, শহরে প্রত্যেকটি পণ্যের যথেষ্ট মজুদ আছে তবে ক্রেতারা বেশি পরিমাণ পণ্য কিনছেন দেখে বাজারে সকল দ্রবের দাম বাড়ান হয়েছে। এ ব্যাপারে যদি ক্রেতা সচেতন হলে ব্যবসায়ীকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে কীভাবে ভোক্তার পকেট কেটে নেয়, সাম্প্রতিক অতীতে পেঁয়াজের বাজারে আমরা দেখেছি। তাদের হীনস্বার্থ চরিতার্থকরণের ব্যাপারে সংশ্নিষ্ট দায়িত্বশীলদের প্রতিকারের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার নজিরও কম নেই। যারা সুযোগ বুঝে নিজেদের লাভালাভের অঙ্ক কষেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের নজর দিতে হবে। শুধু চালই নয়, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও এরই মধ্যে এক দফা বেড়ে গেছে। চালের দাম কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে, যা কোনো অবস্থায়ই স্বাভাবিক নয়।
আমাদের বাস্তবতায় চাল অত্যন্ত স্পর্শকাতর পণ্য। মোটা চালের ওপর নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত এমনকি মধ্যবিত্ত শ্রেণিও নির্ভরশীল। অথচ তুলনামূলকভাবে মোটা চালের দামই বেড়েছে বেশি। সুযোগসন্ধানীরা বাজারে যখন-তখন নিজেদের হীনস্বার্থ হাসিলে তৎপর হয়ে উঠবেন অথচ এর বিপরীতে দায়িত্বশীলদের কিছুই করার থাকবে না, তা তো হতে পারে না। ‘সিন্ডিকেট’ করে বাজারে ইতোমধ্যে নানারকম তুঘলকি কাণ্ড ঘটলেও দৃষ্টান্তযোগ্য প্রতিকারের চিত্র বিরল। এমতাবস্থায় তাদেরকে অপকর্ম থেকে নিবৃত্ত করা যাবে কী করে? আমাদের অভিজ্ঞতায় আছে, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও বাজারে অসাধু ব্যবসায়ীরা হীনতৎপরতায় মেতে ওঠেন। এবার চাল, পিঁয়াজসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ফের সেই বিষয়টিই সামনে এলো। আমাদের ব্যবসায়ীরা মুক্তবাজর অর্থনীতির তত্ত্বের কথা বড় গলায় বলেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে সরকারের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবিতে সোচ্চার থাকেন। কিন্তু মজুদ-সরবরাহে কোনো ঘাটতি না থাকলেও এবং মূল্য হ্রাসে সহায়ক পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরও কেন বাজারে অস্থিরতা? সরকারকে বাজার স্বাভাবিক রাখার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ নিতেই হবে। ভাঙতে হবে অসাধু ব্যবসায়ীদের আঁতাত। অসাধুদের আইনের আওতায় নিতে হবে। পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থাও নির্বিঘ্ন রাখতে হবে। সাধারণ মানুষের দাবী প্রশাসনের নজর দেওয়া একান্ত প্রয়োজন।