বিশেষ প্রতিনিধিঃপৌর এলাকার ৩ কাউন্সিলর কর্ম এলাকায় অনুপস্থিত থাকায় বেকায়দায় ওয়ার্ডের স্থানীয় বাসিন্দারা। অনুপস্থিত তিন কাউন্সিলের একজন বিদেশ ভ্রমণে ছুটি নিয়ে দীর্ঘদিন সময় ধরে অনুপস্থিত রয়েছেন, একজন রয়েছেন কারাগারে আরেকজন মামলার আসামী থাকায় পলাতক।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাসেল গেল ৩ মাস ধরে নেই পৌরসভায় । তার বিরুদ্ধে ভিজিএফ কেলেংকারীর অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের এক কর্মচারী অফিস পিয়ন পশ্চিম তেঘরিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ জাকারিয়াকে মারধর করার মামলায় পলাতক রয়েছেন তিনি। অন্যদিকে, পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবাবিল নূর রয়েছেন কারাগারে। সম্প্রতি.হাজীপাড়ার স্থানীয় সুরুজ মিয়া নামক এক ব্যবসায়ীকে মারধরের মামলায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। পরে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন।
৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. খোরশেদ আলম পৌরসভা থেকে ছুটি নিয়ে আমেরিয়ায় যান। ছুটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তিনি দেশে ফিরেন নি। স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্যই তিনি অমেরিকা চলে গেছেন বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও রয়েছে ।
৯ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিক তাজুল ইসলাম তারেক বলেন, কাউন্সিলর পৌরসভায় না থাকায় আমাদের অনেক বিড়াম্বনায় পড়তে হয়। জন্মনিবন্ধন, নাগরিত্ব সনদ থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজে আমরা পৌর কাউন্সিলরকে পাচ্ছি না। শুনেছি বর্তমানে তিনি আমেরিকায় রয়েছেন।
১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল করিম বলেন, পৌরসভার কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাসেলকে আমরা বিগত ৬ মাস ধরে পাচ্ছি না। বিভিন্ন প্রয়োজনে ফোন করলেও উনার মোবাইল নম্বার বন্ধ থাকে। উনি কোথায় আছেন, আমরা কেউ জানি না। ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইয়াছিন নুর রশিদ বলেন, হোসেন আহমেদ রাসেল কয়েকদিন ধরে পৌরসভায় আসছেন না। তিনি না আসায় পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কার্যক্রম স্থবির রয়েছে। আমরা নাগরিকদের কিছুটা সাহায্য করলেও একজন কাউন্সিলর তার নিজ ওয়ার্ডের যতটা কাজ করতে পারেন, অন্য ওয়ার্ডের কেউ এসে তা করতে পারে না। জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ এইগুলোতে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের স্বাক্ষর জরুরী।
জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোঃ এমরান হোসেন বলেন, কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাসেলের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত শেষ হয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হবে।
পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, কাউন্সিলর না থাকায় আমাদের পৌরবাসীদের সেবা দিতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। ৩ জন কাউন্সিলরের বিপরীতে একজন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর রয়েছেন, তারা এই কাজগুলো করে থাকেন। তাছাড়া ওই সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর না থাকলেও যে ওয়ার্ডে কাউন্সিলর নেই, তার পরের ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছ থেকে সেবা নিতে পারবেন। তিনি আরো বলেন, ৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর খোরশেদ আলমকে আমরা অনুপস্থিত দেখিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি এবং ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হোসেন আহমেদ রাসেলের বিষয়টি তদন্তধীন রয়েছে। ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ব্যক্তিগত মামলায় কারাগারে রয়েছেন।