বিশেষ প্রতিনিধি ঃ সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই থানার মধুরাপুর গ্রামে, কামালপুর গ্রামের প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীগণ কর্তৃক বাড়িঘর লুটতরাজ, হামলা, মামলা, ভাংচুর, ছাত্রী ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করে মানববন্ধন সম্পন্ন হয়েছে।
সোমবার বিকেলে শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ারে জেলার দিরাই থানার ভাটিপাড়া ইউনিয়নের মধুরাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন জখমী পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন মধুরাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইফরাজ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হান্নান, মুক্তিযোদ্বার সন্তান সাইফুল আলম, মধুরাপুর গ্রামের স্নাতক পরীক্ষার্থী মাসুদ আলম, এইচএসসি পরীক্ষার্থী পান্না আক্তার, আজমীলা আক্তার, এসএসসি পরীক্ষার্থী আজিমা আক্তার, তানজিনা আক্তার, মাহফুজা আক্তার, বাবলু মিয়া, জে.এস.সি পরীক্ষার্থী লিজা আক্তার সহ ২০ জন জখমী পরিবারের সদস্যরা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ১৩ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হকের বসত বাড়ি ও বাড়ির সামনে পূর্বদিকে অবস্থিত সরকারি সড়কে পূর্ব বিরোধের জের ধরে কামালপুর গ্রামের সন্ত্রাসী নুর জালাল, আব্দুল খালিক, ফারুকসহ ৩২ জন সন্ত্রাসী এবং মধুরাপুর গ্রামের সুজন, সুমন, তোফায়েল, শহীদ,
মুব্বাসির খাঁসহ ১১০ জন সন্ত্রাসী ঐক্যবদ্ধভাবে ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে পরিকল্পিত হামলা করে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ আমাদের ২০ জন আত্মীয় স্বজনকে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে গুরুতরভাবে জখম করার পাশাপাশি অনেকের বসতঘরের ধান, চাউল, গবাদিপশু লুটতরাজ করে।
ঐ সময় প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থীর বই পুস্তক ও খাল পারাপারের জন্য নৌকা সন্ত্রাসীরা ছিনিয়ে নেয়। গুরুতর আহত ২০ জনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেলা সদর হাসপাতাল, মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কৈতক সরকারি হাসপাতাল ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত ১৪৩ জন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দিরাই থানায় মামলার অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ আমাদের অভিযোগ আমলে নেয়নি। আমরা এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার এর কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধনে মিলিত হলে পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম আমাদেরকে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
কিন্তু আমরা এই ঘটনার ব্যপারে জখমী পরিবারের পক্ষে ইউনুছ আলীকে বাদী করে দিরাই থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি। দিরাই থানা পুলিশ আমাদের দায়েরকৃত অভিযোগটি এফআইআর না করায় প্রতিপক্ষরা আমাদের উপর একের পর এক হামলা ও লুটতরাজ অব্যাহত রেখেছে। আমরা আমাদের প্রাণ রক্ষা, ঘরবাড়ি ও সহায় সম্পদ রক্ষায় মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম বলেন, কিছুদিন আগে দুই গ্রামের দু পক্ষের সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। তারপরই আমরা এক সপ্তাহ ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করেছিলাম।
দুর্গোৎসবের কারণে পুলিশ সদস্যরা পূজামণ্ডপে ডিউটিতে চলে গেলে ঐ গ্রামে প্রতিপক্ষের দ্বারা হামলা মামলা ভাংচুর এর ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের কাছে খবর আসছে। আগামীকাল থেকে আবার পুলিশ প্রেরণ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।